আওয়ামী সরকার বিগত সাড়ে ৫ বছর ধরে রাষ্ট্রের পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে প্রায়ই হিটলারি কায়দায় ব্যাপকহারে মূলত সরকারবিরোধী বৃহত্তম গণতান্ত্রিক জোটের রাজনৈতিক কর্মকা- নিয়ন্ত্রণে ব্যবহারের কারণে এমনিতেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাইবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি, অপহরণ, খুন, গুম, ধর্ষণ, অবৈধ মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। দেশের সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা পুলিশের মূল দায়িত্ব হলেও পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় দাগী ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা আরও বেপরোয়া তৎপরতার মাধ্যমে নাগরিক জীবনকে সন্ত্রস্ত ও নিরাপত্তাহীন করে তুলেছে। আওয়ামী সরকারের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্বিচারে গ্রেফতার ও ধরপাকড়ের মধ্য দিয়ে একদিকে দেশের প্রায় প্রতিটি কারাগারে ধারণ ক্ষমতার ৩ গুণেরও বেশি কারাবন্দী ঢুকিয়ে কারাগারগুলোতে এক ধরনের মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করা হয়েছে। অন্যদিকে কারাগারে দাগী অপরাধী ও শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে লালন-পালন ও অপরাধ পরিচালনার সুযোগ দেয়া হলেও বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের নিছক রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার করে ডা-াবেড়ি পরিয়ে ও পুলিশী রিমান্ডে নেয়ার অনেক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে পুলিশ। বিচারের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি বা সংশোধনের জায়গা কারাগার যদি শীর্ষ সন্ত্রাসী ও কিলারদের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়, তাহলে আইনের শাসন ও নিরাপত্তা লাভের অধিকার থেকে দেশের সাধারণ মানুষ শুধু বঞ্চিতই হয় না, গোটা সমাজকে বিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাহীনতার বিভীষিকাময় অন্ধকারও গ্রাস করে। আওয়ামী সরকারের গতবারের শেষ সময়ে এসে জাতীয় সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার ও সরকারি দলের মদদে এখন চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও দাগী অপরাধীরা আত্মগোপন থেকে বা জামিনে বেরিয়ে নিয়ে এসেছিল বলে প্রকাশিত খবরে দেশ বাসী ও সাধারন মানুষ জানতে পারে। নির্বাচনে ক্যাডারম্যান হিসেবে ব্যবহারের জন্য ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালীদের কাছে এই সন্ত্রাসীদের কদর বহুগুণে বেড়ে গিয়েছিল। সন্ত্রাস, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও দলবাজি নিয়ন্ত্রণে ক্ষমতাসীন দল ও তার অঙ্গ সংগঠনসমূহের নেতা-কর্মী নামধারীদের সন্ত্রাসী কর্মকা- নিয়ন্ত্রণে বিগত সাড়ে ৫ বছরে পুলিশ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কোনো প্রকার ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। শাসক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে গত সাড়ে ৫ বছর ধরে পুলিশের শক্তি-সামর্থ্যরে প্রায় পুরোটাই রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রাম দমনে ব্যবহারের নীতি পরিহার করে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, অপহরণ, হত্যা, গুম, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, প্রতারণা, জালিয়াতি, লুটপাট ও সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে পুলিশের স্বাভাবিক দায়িত্ব পালনে ও জবাবদিহিতা এখনও নিশ্চিত করা হবে না কেন? কারাগারগুলোকে সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের শাস্তির জায়গা হিসেবেই দেখতে চায় দেশের জনগণ, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের জায়গা হিসেবে নয়।
No comments:
Post a Comment