Monday, November 23, 2015

বাংলাদেশের রাজনীতি ও গনত্রন্তের অবস্থান (এক)

মোঃ সাইদুর রহমান
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদের পর থেকে বাংলাদের রাজনীতি এবং গনত্রন্ত অনেকটা কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে আসছে। কখন গনত্রান্তিক উপায়ে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে আবার কখন সামরিক শাসকের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে নেওয়া হয়েছে। ১৯৭১ সালে যে লক্ষ ও উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলার সাহসী সন্তানেরা নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিল কিন্তু পরবর্তীতে সেই লক্ষ বা উদ্দেশ্য অর্জন হয় নাই বরং রক্তের উপর দিয়ে ক্ষমতাকে দখন করে নিয়েছিল সামরিক শাসকগুষ্টি।
বলা যায় বাংলাদেশের গনত্রন্তের যাত্রা শুরু হয়েছিল আজ থেকে ২৪ বছর আগে অর্থাৎ ৯০ পর থেকে এবং সেই সময় থেকে বাংলাদেশে কিছুটা গনত্রন্ত চর্চা চলছিলবাংলাদেশের প্রধান দুইটি রাজনীতিক দলগুলো গনত্রান্তিক ভাবে যেটাকে Formal Democracy  বলে অর্থাৎ একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে একটা নির্বাচন হবে এবং এই নির্বাচনে যে বিজয়ী হয়ে তার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেখা হাচ্ছে যে, সামরিক শাসকরা যে ভাবে ক্ষমতা গ্রহন করে রাজনীতি করেছিল টিক সেই ধরনের একটা রাজনীতি আবার ফিরে আসছে বর্তমান সময়ের রাজনীতিতেসামরিক শাসকদের রাজনীতিতে কিছু নমুনা ছিল কিন্তু এখন সেই নমুনা গুলো আবার ফিরে আসছে। সামরিক শাসকদের রাজনীতির সাথে বর্তমান সরকারের রাজনীতি যে কতটা মিল রয়েছে তা এখানে সংক্কসেপে কয়েকটি নমুনা  তুলে ধরার চেষ্টা করব।
সামরিক শাসকরা সবসময় তাদের নিজের ইচ্ছা মত একটা বিরোধী দল বানিয়ে রাখত ।সেই বিরোধী দল যাথে সব সময় তাদের কথা শুনে এবং তাদের নির্দেশ আনুসারে তাদের রাজনীতি পরিচালনা করে  এরশাদের সময় আমরা দেখছি যেখনে কয়েকটি পালিত বিরোধী দল ছিল টিক একই ভাবে  সরকার রওশন এরশাদের নেত্রীতে সংসদের একটি বিরোধী দল রয়েছে যারা সরকারের আদেশ এবং নির্দেশ অনুযায়ী তাদের রাজনীতি পরিচালনা করছেসরকার ইচ্ছে করে সামরিক শাসকদের মত একটা বিরোধী দল বানিয়ে রেখেছে কারন সংসদে নিয়ম রাখতে গিয়ে একটি বিরোধী দলের প্রয়োজন হয়।
সামরিক শাসকরা তাদের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য তাদের নিজেরদের মত করে কিছু দল তৈরি করে রাখত যাথে করে সামরিক শাসকরা সে এই সমস্থ দল গুলোকে নিয়ত্রন করতে পারত কিন্তু বর্তমান সময় আমরা দেখলাম যে আওয়ামীলীগ সরকার “বি অ্যান আফ” মত কিছু দল তৈরি করেছিল। তাহলে এখনে কিন্তু সামরিক সরকারের সাথে বর্তমান সরকারের একটি মিল পাওয়া যায়।
পৃথিবীর সব সামরিক শাসকরা ক্ষমতা নেওয়ার পর প্রথম যে কাজটি করে সে টি হল বিরোধী দলের নেতাকর্মী বা বিরোধী মতের নেতাকর্মীকে দমন নিদন করতে ভুল করে না । কারন সামরিক শাসকরা ক্ষমতা গ্রহন করে বিরোধী দলকে দমন করতে না পারলে তার নিজের ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে পারবে নাসেটা মিশর কিংবা সিরিয়া এমনকি বাংলাদেশের অতীত ইতিহাস দেখলে আমার মনে হয় বোজতে ভুল হবে না। বর্তমান সরকার ও কিন্তু সেই পথে অনুসরণ করে চলছে বলে আমার মনে হয়বর্তমান সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার সরকারের প্রধান বিরোধী মত যাদের নিয়ে সরকারের ভয়ের কোন কমতি ছিল না সেই জামাতের প্রথম শারীর নেতাদেরকে যুদ্দ অপরাদের অভিযোগ এনে দীর্ঘদিন থেকে জেলে বন্ধী করে রাখা হয়েছে এবং সেই সাথে কয়েক জনের ফাসি কার্যকর করা হয়েছে সেই সাথে প্রধান বিরোধী দলের প্রথম শারীর প্রায় সব নেতাদেরকে মামলা দিয়ে জেলে বন্ধী করে  রাখা হয়েছে অনেক নেতা কর্মীকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে আবার অনেকেকে নামধারী বন্ধুক যুদ্দেত মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে।  
সামরিক শাসকদের মত সরকার আইন শৃঙ্গলা বাহিনীকে তার অস্তিত রক্ষা করতে ব্যবহার করছে।   বিচার বিভাগে সরকার ইচ্ছেমত নিজের অনুসারীদেরকে বসিয়ে সরকারের আদেশ বাস্তবায়ন বিভাগে পরিনত করেছে। যার জন্য বিচার বিভাগ থেকে জনগন আস্তা হারিয়ে ফেলেছে। এই জন্য ছেলেকে হত্যা করার পর ও পিতা খুনিদের বিচার চায় না সরকারের সাজানো বিচারকদের কাছে।
সামরিক শাসকরা ক্ষমতা দখল করার পর তাদের বিপক্ষের সংবাদ মাধ্যম গুলোকে বন্ধ করে দিত যাথে করে সংবাদ মাধ্যম গুলো তাদের সমালোচনা বা বাদের বিপক্ষে কোন সংবদ প্রকাশিত করতে না  পারে এবং তাদের পছন্দের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম রাখত যে সংবাদ মাধ্যম গুলো তাদের নির্দেশ অনুযায়ী সংবাদ প্রকাশিত করতে পারে। বর্তমান সরকার ও কিন্তু টিক সেই পথ অনুসরণ করছে সেই সাথে আমরা দেখছি বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে “ দৈনিক আমার দেশ” বন্ধ করে দিয়েছে এবং সেই সাথে পত্রিকার সংপাদকে মামালা দিয়ে জেলে বন্ধী করে রাখা হয়েছে। দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সাথে সাথে দিগিন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সামরিক শাসকরা ক্ষমতাকে কেন্দ্রীবভন করে রাখত যাতে করে তার ক্ষমতাকে সে নিজের হাতের ভিতরে বন্ধী করে রাখতে পারে। বর্তমান একই ভাবে ক্ষমতার কেন্দ্রীবভন চলছে। ক্ষমতার এই কেন্দ্রীবভন যে শুধু মাত্র বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার সময় চলছে তা বললে হয়ত ভুল হবে সেটা বি অ্যান পি সরকার সময় কিন্তু ছিল। এই ক্ষমতা কেন্দ্রীবভন এর মাধ্যমে দেশের সম্পদ বণ্টন করা হচ্ছে।  নিজের দলের নেতা কর্মীকে খুশি করতে গিয়ে তাদের মধ্যে খাল,বিল, রাস্তা নির্মাণ, ব্রিজ নির্মাণের কাজ বণ্টন করে দেওয়া হচ্ছে।

এই কতগুলো দিক থেকে আমার মহে হচ্ছিল যে- ৯০ পর থেকে আমরা যে একটা গনত্রন্তের পথে  হাঁটছিলাম সামরিক শাসকদের পরাজিত করে কিন্তু ২০১০ সালের পর থেকে আমরা কি আবার ৯০ সালের আগের দিকে চলে যাচ্ছি সেটা কিন্তু এখন ভাববার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।